# রোহিঙ্গা আগমনের পাঁচ বছর পূর্তিতে সিসিএনএফ’র সভা
# মায়ানমারের উপর চাপ তৈরিতে জাতিসংঘকে সফল হতেই হবে
ইমাম খাইর, কক্সবাজার :::
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মায়ানমারের উপর কার্যকর চাপ প্রয়োগে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পুরোপুরি ব্যর্থ বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের দায় পুরোটাই মায়ানমারের, এটি একটি আন্তর্জাতিক সংকট, অথচ কোনও রকম দায় না থাকার পরেও এই সংকটের দায়ভার বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এর দায়ভার বিশ্ববাসীকে নিতে হবে।
রোহিঙ্গা আগমনের পাঁচ বছর পূর্তিতে বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ)-এর আলোচনা সভায় তাঁরা এসব কথা বলেন।
কক্সবাজারে কর্মরত প্রায় ৫০টি স্থানীয় ও জাতীয় সংস্থার নেটওয়ার্ক সিসিএনএফ আয়োজিত সভাটি সঞ্চালনা করেন ফোরামের কো-চেয়ার ও কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী এবং আরেকজন কো-চেয়ার ও পালসের প্রধান নির্বাহী আবু মোর্শেদ চৌধুরী।
এতে আরও বক্তৃতা করেন নারী পক্ষের শিরীন হক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস এন্ড জাস্টিস’র ব্যারিস্টার মানজুর হাসান, ডিজাস্টার ফোরামের নঈম গওহর ওয়াহরা, ইপসা’র মো. আরিফুর রহমান, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থার শিউলি শর্মা, সুশীলনের মো. মজিুবর রহমান, একলাবের সঙ্গীতা ঘোষ এবং সিসিএনএফ’র কো-চেয়ার এবং মুক্তি কক্সবাজার’র প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার ও নেটওয়ার্কটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আবু মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, দেশে রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন প্রায় ১২ লাখ বলে জানা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের কয়েকটি রেজুলেশন ছাড়া এদেরকে মায়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যকর কোনও উদ্যোগ নেই, এতে করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনিশ্চয়তা ও হতাশা কাজ করছে, একই ধরনের হতাশা আছে স্থানীয়দের মধ্যেও। প্রত্যাবসন নিশ্চিত করতে প্রথাগত কূটনীতির পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক কূটনীতি বা ট্র্যাক টু ডিপ্লোম্যাসির প্রতি জোর দিতে হবে। শিউলী শর্মা রোহিঙ্গা শিবিরে নারী নেতৃত্ব তৈরির উপর জোর দেন।
বিমল চন্দ্র দে সরকার বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রায় ৫০ ভাগই শিশু-যুব সমাজ। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে ক্যাম্পের ভিতর বিভিন্ন কার্যক্রমে ব্যস্ত রাখতে হবে, কারিগরি ও জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এতে করে তাঁদের বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা কমবে এবং তাঁরা মায়ানমারে ফিরে গেলেও সম্মানজনক কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে।
মো. মুজিবুর রহমান বলেন, শিবির তৈরি করতে গিয়ে প্রায় ৬ হাজার একর পাহাড় এবং ২ হাজার একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামাজিক বনায়নে সম্পৃক্ত প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পাঁচ বছরেও কোনও ক্ষতিপূরণ পায়নি। পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। প্লাস্টিক একটা বড় সংকট, সকল প্লাস্টিক শিবিরে নিষিদ্ধ করতে হবে। পরিবেশ পুনরুদ্ধারে একটি বিশেষ তহবিল তৈরি করতে হবে।
সঙ্গীতা ঘোষ বলেন, কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোহিঙ্গা কর্মসূচির পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করতে হবে, স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিতে হবে, এতে করে খরচ কমিয়ে আনা যাবে। বর্তমানে রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে স্থানীয় সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণ অপ্রতুল।
মো. আরিফুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে হবে যাতে করে কোনও গোষ্ঠী ধর্মীয় মৌলবাদী দল তৈরি করতে না পারে। ক্যাম্পে মেীলবাদী দল তৈরি হলে তা দেশের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
গওহর নঈম ওয়াহরা বলেন, প্রত্যাবসনকেই রাখতে হবে রোহিঙ্গা কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রত্যাবসনের জন্য একটি জাতীয় কৌশলপত্র তৈরি করতে হবে এবং নিয়মিতভাবে সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অগ্রগতি যাচাই করে দেখতে হবে। এছাড়াও বাংলাদেশ ও মায়ানমারসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাগরিক সমাজগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
ব্যরিস্টার মানজুর হাসান বলেন, প্রত্যাবসনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের বড় ব্যর্থতা আছে। এক্ষেত্রে ব্যর্থ আসিয়ানও। রোহিঙ্গা সংকট একটি দীর্ঘায়িত সংকটে পরিণত হয়ে গেছে, তাই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন। সংকট মোকাবেলায় অর্থ সহায়তা কমছে, এটা মোকাবেলায় লোকালাইজেশন রোডম্যাপ বাস্তবায়নের কোনও বিকল্প নাই।
শিরীন হক বলেন, প্রত্যাবসনের আগ পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিবিরের নারীদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। শিবিরে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারের জন্য সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন ডলারের ৭০টির মতো প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশের এই সম্পদ রক্ষায়, কক্সবাজারের উন্নতির প্রচেষ্টাকে সকল ধরনের হুমকি থেকে মুক্ত রাখতে হবে। টেকসই প্রত্যাবসন নিশ্চিত করতে না পারলে কক্সবাজারের জন্য, দেশের জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে এই রোহিঙ্গা সংকট।
প্রকাশ:
২০২২-০৮-২৪ ২০:১৮:২৪
আপডেট:২০২২-০৮-২৪ ২০:১৮:২৪
- ব্যাপক উৎসাহ—উদ্দীপনায় সাংবাদিক সংসদের এক যুগপূর্তি উৎসব সম্পন্ন
- চকরিয়ায় উপকুলের সাগর চ্যানেলের ট্রলার থেকে ৩৮ কোটি টাকা মূল্যের ১২ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার
- চকরিয়া হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
- অবাঞ্চিত ঘোষণা নব-গঠিত মাতামুহুরী আওয়ামী লীগের
- আজ ২৯ এপ্রিলের ভয়াবহতা এখনও ভুলেনি উপকূলবাসী
- সোহেল,জনি,রাজ্জাক ও দেলোয়ার চেয়ারম্যান নির্বাচিত: একটিতে ফলাফল নিয়ে ধোঁয়াশা…
- চকরিয়া ভরামুহুরীতে বাড়ি নির্মাণে বাঁধা হামলা: নারীসহ আহত ৩, রড সিমেন্ট ইট লুট
- চকরিয়ায় ফিসিং বোট তৈরীর হিড়িক: ব্যবহার হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের চোরাই মাদার ট্রী
- চকরিয়ায় বাড়ির ছাদে উঠে আম পাড়তে গিয়ে পা-পিছলে পড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
- চকরিয়ায এমপি ইবরাহীমের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
- চকরিয়ায় কৃষক প্রশিক্ষণ ও মাঠ দিবস পালিত
- কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, শহরজুড়ে উত্তেজনা
- চকরিয়াতে বৃষ্টির জন্য তপ্ত রোদে কাঁদলেন মুসল্লীরা
- চকরিয়ায় কৃষক প্রশিক্ষণ ও মাঠ দিবস পালিত
- চকরিয়া ভরামুহুরীতে বাড়ি নির্মাণে বাঁধা হামলা: নারীসহ আহত ৩, রড সিমেন্ট ইট লুট
- সোহেল,জনি,রাজ্জাক ও দেলোয়ার চেয়ারম্যান নির্বাচিত: একটিতে ফলাফল নিয়ে ধোঁয়াশা…
- অবাঞ্চিত ঘোষণা নব-গঠিত মাতামুহুরী আওয়ামী লীগের
- চকরিয়ায় ফিসিং বোট তৈরীর হিড়িক: ব্যবহার হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের চোরাই মাদার ট্রী
- চকরিয়ায এমপি ইবরাহীমের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
- চকরিয়ায় বাড়ির ছাদে উঠে আম পাড়তে গিয়ে পা-পিছলে পড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
- চকরিয়ায় উপকুলের সাগর চ্যানেলের ট্রলার থেকে ৩৮ কোটি টাকা মূল্যের ১২ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার
- আজ ২৯ এপ্রিলের ভয়াবহতা এখনও ভুলেনি উপকূলবাসী
পাঠকের মতামত: